লেখক: এ.কে.এম. আনোয়ারুল কবীর
পর্ব ৪- নবম হিজরিতে রাসূল (সা.) সূরা তওবার প্রথম কয়েকটি আয়াত প্রচারের জন্য হযরত আবু বকরের নেতৃত্বে হজ্বের দল প্রেরণ করলে জিবরাঈল (আ.) অবতীর্ণ হয়ে বলেন : ‘এ আয়াত আপনি অথবা এমন কেউ যে আপনার থেকে সে ছাড়া কেউ প্রচারের অধিকার রাখে না।’ তখন রাসূল (সা.) হযরত আলীকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হিসেবে প্রেরণ করেন।১৩
একইরূপ ঘটনা হযরত ফাতেমা (আ.)-এর ক্ষেত্রেও ঘটেছে যখন আবু লুবাবা তাবুকের যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করায় অনুশোচিত হয়ে তওবার উদ্দেশ্যে নিজেকে দড়ি দিয়ে বেঁধে আল্লাহর শপথ করে বলেন যে,স্বয়ং রাসূল (সা.) যদি এসে তাঁকে মুক্ত না করেন তাহলে তিনি ঐ অবস্থায়ই থাকবেন। তাঁর তওবা গৃহীত হলে হযরত ফাতেমা তাঁকে শৃঙ্খলমুক্ত করতে গেলে তিনি আপত্তি জানান। তখন রাসূলুল্লাহ্ (সা.) বলেন : ‘নিশ্চয় ফাতেমা আমার মাংসপিণ্ড।’ অতঃপর ফাতেমা তাঁর বাঁধন খুলে দেন।১৪
হাদীসটির দ্বিতীয় অংশ হলো ফাতেমার ক্রোধে রাসূল (সা.) ক্রোধান্বিত হন অর্থাৎ যে ফাতেমাকে ক্রোধান্বিত করে সে রাসূলকেই ক্রোধান্বিত করে।
প্রথমে আমরা বাক্যাংশের অর্থ ও অনুরূপ বর্ণনা থেকে তার মধ্যে যে মূল্যবান সম্পদ লুক্কায়িত রয়েছে তা উদ্ঘাটনের চেষ্টা করব। তিনটি শিরোনামে আমরা আলোচনাটি উপস্থাপন করব। প্রথমত ফাতেমার ক্রোধে রাসূলের ক্রোধান্বিত হওয়ার বিষয়টি অসংখ্য গ্রন্থে বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। এ হাদীসটি মিসওয়ার ইবনে মাখরামা ব্যতীত অন্যদের সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। তবে সেগুলোর বৈশিষ্ট্য হলো তাতে ফাতেমার ক্রোধে,এমনকি আল্লাহ্ও ক্রোধান্বিত হন বলে বলা হয়েছে। আমরা এরূপ কয়েকটি বর্ণনা এখানে উদ্ধৃত করছি।
হাকেম তাঁর ‘মুসতাদরাক’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন : আবুল আব্বাস মুহাম্মাদ ইবনে ইয়াকুব,হাসান ইবনে আলী ইবনে আফ্ফান আল আমেরী থেকে,তিনি কুফার অধিবাসী মুহাম্মাদ ইবনে আলী ইবনে দুহাইম থেকে,তিনি আহমাদ ইবনে হাতিম থেকে,তিনি তাঁর পিতার সূত্রে আলী ইবনে হুসাইন থেকে এবং তিনি তাঁর পিতার সূত্রে আলী ইবনে আবি তালিব থেকে বর্ণনা করেছেন যে,রাসূলুল্লাহ্ (সা.) ফাতেমাকে বলেন : ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমার ক্রোধে ক্রোধান্বিত হন এবং তোমার সন্তুষ্টিতে সন্তুষ্ট হন।’১৫ ....চলবে...